কিছু কিছু পৌরাণিক পন্ডিত দাবী করে অর্জুনের রথের ধ্বজায়(পতাকায়) নাকি স্বয়ং হনুমানজী ( ত্রেতা যুগের ) বিদ্যমান ছিলেন।
অর্জুনের রথের পতাকায় স্বয়ং হনুমানজী ছিলেন একথা মহাভারতে কোথাও বলা নেই।
যেমন আজকের অত্যাধুনিক মিসাইল, যুদ্ধবিমান ইত্যাদিতে পরিচয় বোধক বিভিন্ন চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। রাষ্টের ধ্বজা সেনাদের সমন্ধ বিভাগ করে। তাই সেনাদের চিহ্নিত করার জন্য বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করা হয়। (কেউ কেউ সেনাদের পোশাক ভিন্নতা করে নিজ সৈন্য চিহ্নিত করার জন্য)
এই প্রকারে অর্জুনের রথে অনেক অনেক মহাপুরুষ, বীর যোদ্ধা, আর শ্রদ্ধেয় পুরুষদের ছবি অংকিত ছিলো। এগুলো ছিলো সম্মান আর সাহসের প্রতীক।
যারা বলে থাকে অর্জুনের রথে কেবল হনুমানজীর মূর্ত্তি ছিলো তারা যেন দয়া করে মহাভারতের
( উদ্যোগপর্বান্তর্গত যানসন্ধি পর্বের অধ্যায় ৫৬ এর ৭এবং ৮ সংখ্যক শ্লোক পরে দেখেন।)
সঞ্জয় উবাচ – প্রজানাথ! বিশ্বকর্মা ত্বষ্টা তথা প্রজাপতি ইন্দ্রের সাথে মিলে অর্জুনের রথের ধ্বজায় অনেক প্রকার রূপ তৈরী করেছেন। ৭
সেই তিন জন দেবমায়ার দ্বারা সেই ধ্বজা মধ্যে ছোট বড় অনেক প্রকার বহুমূল্য এবং দিব্য মূর্তিকে নির্মাণ করেছেন। ৮
এই শ্লোকেই স্পষ্ট প্রমান দেয় অর্জুনের ধ্বজার বর্ণন। এখানে কেবল হনুমানের কথা বলা হয় নি। ওখানে অনেক রাজা, বীর,মহাপুরুষ দের ছবিও ছিলো। একথা সত্য যে তার মধ্যে হনুমানজীর ছবিও অংকিত ছিলো।
কিন্তু কিছু পৌরাণিক বন্ধুগণ ধু সেখানে কেবল হনুমানজীকেই দেখতে পান। তারা মনেহয় এটা জানত না যে, সেখানে যোগেশ্বর স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ যেমন মহাবীর,বুদ্ধিমান আর জ্ঞানগম্ভীর চিন্তাধারার ছিলেন তেমনি ছিলেন পক্ষপাত শুন্য ব্যক্তি। তিনি কিকরে সেখানে কেবল হনুমানজীর ছবি দিতে দিতেন। এতে বাকি বীর মহাপুরুষ দের অপমান করা হতো না? তাছাড়া মহাভারতে তো বলাই আছে সেখানে অনেকের ছবি অংকিত ছিলো।
এক শ্রেণীর পৌরাণিক দের দাবী হনুমানজী নাকি সর্বদাই প্রভু শ্রী রামচন্দের চরণে সেবা করতেন,
আর এক শ্রেণীরর দাবি শ্রীরামচন্দ্র নাকি শ্রীকৃষ্ণ হয়ে জন্ম নিয়েছেন।
ফির সন্দেহের বিষয় যদি তাই হতো তাহলে যে ভক্ত তার প্রভূর চরণ ছাড়া বুঝত না সে কি করে প্রভুর মাথার উপরে উঠবে। এতে প্রভুর অপমান হবে না কি?
পৌরাণিক দের এই তর্ক কি করে শেষ হবে।
আসা করি এই পোষ্ট প্রকৃত সত্য জানতে সাহায্য করবে।