ভাগবদ্ পুরাণ সমীক্ষা

শ্রীমদ্ভাগবত_পুরাণ এটা কবে রচিত? এটা কি
কৃষ্ণদৈপরায়ণ ব্যাসদেব রচনা করেছেন? এর
স্কন্ধ, অধ্যায় ও শ্লোক সংখ্য কত? # উত্তর – বেশীর ভাগ পৌরাণিক দাদারাই বলবে
এটা কৃষ্ণদৈপরায়ন ব্যাসদেব রচনা করেছেন
মহাভারতের যুগে এবং এতে শ্লোক সংখ্যা ১৮হাজার। প্রমাণ হিসেবে তারা ঐ গ্রন্থের একটি
শ্লোক দেখিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করবে। শ্লোকটা
একটু দেখেনি-
“অষ্টাদশ শ্রী ভাগবত মিষ্যতে” # শ্রীমদ্ভাগবত ১২।১৩।৯. অর্থাৎ ভাগবতে মোট ১৮০০০ শ্লোক আছে। প্রিয় শুধি,
এবার আমার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন, আশা
করি অনেক নতুন তথ্য পাবেন। ১. এই গ্রন্থটা মহাভারতের যুগের রচনাকৃত নয়।
আর এর প্রমাণ ভাগবতেই আছে। দেখুন- “আশ্রমাঃ ঘরনৈরুদ্বস্তীর্ থানি সরিস্তথা। দেবতা য়তনান্যত্র দুষ্টর্নষ্টানি ভূরিশঃ” # ভাগবতমাহাত্ম প্রকরণ ১।৩৪. অর্থাৎ নারদ বলছেন যে কলিযুগে যবনরা (মুসলিম)
ভারতের নদী, তীর্থ ও আশ্রমের উপর অধিকার
করে নিয়েছে এবং দেবমন্দিরকে নষ্ট করে দিয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল মহাভারতের যুগে কি যবন বা
মুসলিম ছিল??? না ছিল না, এর থেকেই পরিষ্কার
যে ভাগবত মুসলিম আক্রমণের পরেই রচিত হয়েছে
এবং কৃষ্ণদৈপরায়ণ ব্যাসদেব এটা রচনা করেনি।
২. এর শ্লোক সংখ্যা কখনোই ১৮০০০ নয়, কেননা গণনা করলে এতে মাহাত্মসহ মোট ১৪৭৬৪টা শ্লোক (প্রায়) পাওয়া যায়। মানে এই
গ্রন্থে ভেজাল আছে এটা ১০০ ভাগ নিশ্চত।
এখন বলতে পারে যে আমার কথাটা যে ঠিক তার
প্রমাণ কি??? কথাটা অযোক্তিক নয়, তাই আপনাদের জন্য প্রমাণ উপস্থাপন করলাম। যারা
যাচাই করতে চান তারা রামকৃষ্ণ মিশন থেকে
গীতাপ্রেস এর শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ কিনে যাচাই
করে নিবেন-
মোট স্কন্ধ ১২টা।
মোট অধ্যায় ৩৩৫টা, মাহাত্মসহ মোট অধ্যায় ৩৪৫টা। মোট শ্লোক সংখ্যা ১৪০৬১টা, মাহাত্মসহ মোট শ্লোক ১৪৭৬৪টা প্রায়। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন কোন স্কন্ধে কতটা
অধ্যায় ও শ্লোক আছে ??? তাই সেটাও দিলাম
আপনাদের জানার জন্য-
১ম স্কন্ধে ১৯টি অধ্যায় ও ৮০৯টা শ্লোক আছে।
২য় স্কন্ধে ১০টি অধ্যায় ও ৩৯১টা শ্লোক আছে।
৩য় স্কন্ধে ৩৩টি অধ্যায় ও ১৩১৭টা শ্লোক আছে।
৪র্থ স্কন্ধে ৩১টি অধ্যায় ও ১৪৪৫টা শ্লোক
আছে।
৫ম স্কন্ধে ২৬টি অধ্যায় ও ৬৬৮টা শ্লোক আছে।
৬ষ্ঠ স্কন্ধে ১৯টি অধ্যায় ও ৮৫১টা শ্লোক আছে।
৭ম স্কন্ধে ১৫টি অধ্যায় ও ৭৫০টা শ্লোক আছে।
৮ম স্কন্ধে ২৪টি অধ্যায় ও ৯৩১টা শ্লোক আছে।
৯ম স্কন্ধে ২৪টি অধ্যায় ও ৯৬৪টা শ্লোক আছে।
১০ম স্কন্ধে ৯০টি অধ্যায় ও ৩৯৪৮টা শ্লোক
আছে।
১১দশ স্কন্ধে ৩১টি অধ্যায় ও ১৩৬৭টা শ্লোক আছে।
১২দশ স্কন্ধে ১৩টি অধ্যায় ও ৫৬৬টা শ্লোক
আছে।
মানে মাহাত্ম বাদে অধ্যায় প্রায় ৩৩৫টা ও
শ্লোক প্রায় ১৪০৬১টা। শুরুতে মাহাত্ম্যমে অধ্যায় আছে ৬টি ও শ্লোক
আছে প্রায় ৫০৪টা।
শেষে মাহাত্ম্যমে অধ্যায় আছে ৪টি ও শ্লোক
আছে প্রায় ১৯৯টা।
মানে মাহাত্ম্যমসহ অধ্যায় প্রায় ৩৪৫টা ও
মাহাত্ম্যমসহ শ্লোক আছে প্রায় ১৪৭৬৪টা।
বিঃদ্রঃ এই পোষ্টটির জন্য আর্য সমাজ, আর্য
বীর ও অগ্নিবীররা কোন দায়ী থাকবে না। এটা
একান্তই Rajon Arya এর ব্যক্তিগত একটা গবেষণা। এখানে প্রায় লেখার কারণ হল মনের ভুলে
গণনায় সংখ্যাটা হালকা এদিক সেদিক হতে পারে।
তবে হবে না যে এটা ৯৯ ভাগ নিশ্চিত। তারপরও
আপনাদের যাচাই করার অনুরোধ রইল। নমস্তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *